Sahityapedia
Login Create Account
Home
Search
Dashboard
Notifications
Settings
27 Mar 2024 · 4 min read

পছন্দের ঘাটশিলা স্টেশন

ঘাটশিলা স্টেশনটিকে আমার ভীষণ ভালো লেগেছিল। একবারই গেছি ঘাটশিলায়। তবে আশা আছে আরো কয়েকবার যাব।

কলকাতার কাছাকাছি এমন সুন্দর পাহাড়ী জায়গা আর দুটি নেই। এখানে নদী আছে ঝর্ণা আছে জঙ্গল আছে —– আর কী চাই? কোনো কবি যদি এমন জায়গায় আসেন তবে প্রকৃতির মনোহর রূপ দেখে তিনি সত্যিই মুগ্ধ হয়ে যাবেন। কত কবিতার প্লট যে তাঁর মাথায় আসবে তা তিনি ছাড়া আর কে জানবে?

তা আমি পাহাড় নদী এসবের কথা বাদ দিয়ে হঠাৎ একটা স্টেশনের বর্ণনা কেন করতে যাচ্ছি? কারণ এই স্টেশনটিকে আমার ভালো লেগেছিল তাই। কেউ যদি কাউকে ভালবাসে তবে তো সে তাকে নিয়ে কবিতা লিখতে চায় গল্প লিখতে চায় । তাই না? আমার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এর বাইরে নয়।

ঘাটশিলায় আমরা উঠেছিলাম রামকৃষ্ণ মঠে। এই মঠটি স্টেশন থেকে প্রায় এক কিমি দূরে অবস্থিত।এই রামকৃষ্ণ মঠের সামনে দিয়েই মেন রাস্তা চলে গেছে আর রাস্তার পাশেই রেললাইন। মানে রাস্তা ও রেললাইন সমান্তরাল ভাবে চলে গেছে।

বললে বিশ্বাস করবেন না এই ঘাটশিলা স্টেশন দিয়ে দৈনিক (আমি যদি খুব ভুল না বলি) তাও পঞ্চাশ-ষাটটা ট্রেন চলে। ভেবে দেখেছেন? ধরুন পাঁচ থেকে দশ মিনিট অন্তর অন্তর এক একটা ট্রেন যায়। সময়টা এর একটু এদিক ওদিক হতেই পারে। ঐ মালগাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেন লোকাল ট্রেন এসবই যায়।

রামকৃষ্ণ মঠে থাকাকালীন এত ট্রেনের আওয়াজ পেয়েছি যে কী বলবো! মঠ থেকে দেখতাম কোনো কোনো ট্রেন থ্রু হয়ে চলে যাচ্ছে আবার কোনো কোনো ট্রেন থামছে। সে এক দারুণ ব্যাপার।

মঠে যখন ঘুম থেকে উঠতাম ভোরে তখনও শুনতাম কি বিশাল শব্দ করে করে সব ট্রেন চলে যাচ্ছে। আবার অনেক রাত অব্দিও পেতাম ট্রেনের আওয়াজ।

মঠের সামনে যে রাস্তা আছে সে রাস্তার পাশেই তো রেললাইন। মাঝেমধ্যে সন্ধেবেলা মূলত আমি রাস্তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে থাকতাম। ট্রেন যাওয়া দেখতাম। আমার স্বভাবটা ঐ অপু-দুর্গার মত। সত্যিই অপু-দুর্গার স্রষ্টার জায়গায় গিয়ে যে আমার এমন হ্যাবিট জন্মেছে তা নয়। এ ট্রেন দেখার অভ্যাস আমার বহুদিনের। ট্রেন যাচ্ছে আসছে এমন দৃশ্য দেখতে আমার দারুণ লাগে।

দেখতাম কত কী ট্রেন হাওড়া থেকে আসছে নয়তো টাটানগর থেকে আসছে। এক্সপ্রেস ট্রেনের নামগুলো পড়ার চেষ্টা করতাম।

এখানে আমি জীবনে প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দেখি। কী স্পিড সেই ট্রেনের! হুইসেল একনাগাড়ে দিতে দিতে স্টেশন পার করে চলে যাচ্ছে।

এই মঠের সামনে যে রাস্তা আছে সেখান থেকেই দেখা যায় ঘাটশিলা স্টেশনটা।

আর একটি কথা যদি না বলি আমার লেখাটি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। যতটুকু সময় মঠে থাকতাম দেখতাম স্টেশনের গেটম্যান এই গেট তুলছেন আবার গেট ফেলছেন। হবে না? এত ঘন ঘন ট্রেন এলে গেলে তো তাই করতে হবে।

মনে মনে তখন ভাবতাম সারা ভারতের মধ্যে মনে হয় এই মানুষটিরই এত কাজ বারবার গেট নামানো আবার তোলানো। কিন্তু তারপরে ভাবতাম, নাঃ এমন স্টেশন ভারতে প্রচুর আছে। সবার কথা কি জানা সম্ভব হয় একসাথে?

আমার শুধু ইচ্ছা হতো ইশ, যদি এমন জায়গায় আমার একটা বাড়ি হত।আহা, তাহলে এমন দিনে-রাতে সারাক্ষণ ট্রেনের আওয়াজ শুনতে পেতাম। ট্রেনের হুইসেলের আওয়াজ, ট্রেন যাওয়ার আওয়াজ…।

আমি যেখানে থাকি মানে আমার যেখানে আসল বাড়ি সেখান থেকে স্টেশন খুব দূরে নয়। হেঁটে গেলে দশ মিনিট। তবে সেখানে এমন ঘন ঘন ট্রেন চলে না। চলে মূলত লোকাল ট্রেন।

কোনো মানুষের সব ইচ্ছা পূরণ হয় কি?
আমার ইচ্ছাগুলো ভগবান একদিন ঠিকই পূরণ করবেন —- এই আশাতেই বেঁচে থাকি।

এবারে স্টেশনের বর্ণনায় আসি। ঠিক বিকালের শেষের দিকে আমরা ঘাটশিলা স্টেশনে নেমেছিলাম। ট্রেনটি ছিল হাওড়া-রাঁচি ইন্টারসিটি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। মাঝপথে কিছু জায়গায় লেট করার জন্য দেরি হয়ে গেছিল। আর আমরা গেছিলাম শীতকালে। নভেম্বর মাসে। কাজেই তখন সন্ধ্যা তো একটু তাড়াতাড়ি হয় তাই তখন ভালো করে স্টেশন দেখা হয়নি। তাড়াতাড়ি স্টেশন থেকে বাইরে এসে একটি অটো ধরে রামকৃষ্ণ মঠে গিয়ে উঠি।

কিন্তু যেদিন ফিরে আসার ট্রেন ধরি আমরা সেদিন সকাল আটটা কী ন’টা নাগাদ স্টেশনে চলে আসি। যে ট্রেনে করে বাড়ি ফিরব সে ট্রেন যদিও আরও পরে আসবে। তবুও এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্যাপার তো। তাই আগেভাগেই এসেছিলাম। সেদিন ভালো করে স্টেশনটা দেখি। বেশ কিছু ছবি তুলি।

এর আগে আমি ইউটিউবে দেখেছিলাম যে ঘাটশিলা স্টেশন থেকে পাহাড় দেখা যায়। তো যেদিন আসি সেদিন ভালো করে কিছুই দেখা হয়নি তাই চলে যাবার দিন ভালো করে দেখার চেষ্টা করলাম। একদম রোদ ঝলমলে আকাশ ছিল। স্টেশনের ওভারব্রিজে উঠে দেখি সত্যিই দূরে পাহাড় দেখা যাচ্ছে তবে খুব হালকা হালকা। সাদা খাতায় পেনসিল দিয়ে হালকা কিছু রেখা টানলে যেমন দেখতে লাগে আমার তেমনই মনে হয়েছিল দূরের পাহাড়গুলি দেখে। হালকা ধূসর বর্ণের পাহাড় বহু দূরে দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে পাহাড়গুলো আকাশের গায়ে মিশে আছে। আহা, সেই দৃশ্য যেন আজও ভুলতে পারি না! এই লেখাটি লেখার সময় মনে হচ্ছে আমি যেন এখনই ঐ ওভারব্রিজে দাঁড়িয়ে আছি আর দেখে যাচ্ছি দূরের অপরূপ সুন্দর দৃশ্য।

এছাড়া ঘাটশিলা স্টেশনটি বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। নোংরা কোথাও দেখা যায় না। কত ট্রেন আসছে যাচ্ছে দেখছিলাম। কত এক্সপ্রেস ট্রেন কত মালগাড়ি।ঘাটশিলা স্টেশনের একদিকে টাটানগরের লাইন আর একদিকে খড়্গপুরের লাইন তাই এত ট্রেনের যাতায়াত।

আসলে এখানে এত বাঙালি বেড়াতে আসে যে ঘাটশিলায় মোটামুটি বাঙলা ভাষার চল আছে। মোটামুটি বলছি কারণ খুব একটা নেই। তাই ঘাটশিলা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের কোনো কোনো দেয়ালে দেখলাম বাঙলাতে অনেক কিছু লেখা আছে।

যে ট্রেনে করে হাওড়া থেকে এসেছিলাম সেই একই ট্রেনে করে আবার হাওড়ায় ফিরে গেছিলাম। ট্রেনটি যদিও নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘন্টা পরে এসেছিল। আমার সময়টা খুব হালকা মনে পড়ছে; ঐ দুপুর একটার কাছাকাছি ট্রেনটি আসে স্টেশনে।যাই হোক ঘাটশিলাকে বিদায় জানিয়ে রাঁচি-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের সিটে এসে বসলাম।

—- অর্ঘ্যদীপ চক্রবর্তী
২৭/৩/২০২৪

166 Views
📢 Stay Updated with Sahityapedia!
Join our official announcements group on WhatsApp to receive all the major updates from Sahityapedia directly on your phone.
You may also like:
प्रेरणा और पराक्रम
प्रेरणा और पराक्रम
नंदलाल मणि त्रिपाठी पीताम्बर
जब कोई हो पानी के बिन……….
जब कोई हो पानी के बिन……….
shabina. Naaz
गम के पीछे ही खुशी है ये खुशी कहने लगी।
गम के पीछे ही खुशी है ये खुशी कहने लगी।
सत्य कुमार प्रेमी
समय बदलता तो हैं,पर थोड़ी देर से.
समय बदलता तो हैं,पर थोड़ी देर से.
Piyush Goel
"साहस"
Dr. Kishan tandon kranti
Life isn't all about dating. Focus on achieving your goals a
Life isn't all about dating. Focus on achieving your goals a
पूर्वार्थ
मु
मु
*प्रणय*
हमारे बिना तुम, जी नहीं सकोगे
हमारे बिना तुम, जी नहीं सकोगे
gurudeenverma198
अटल बिहारी मालवीय जी (रवि प्रकाश की तीन कुंडलियाँ)
अटल बिहारी मालवीय जी (रवि प्रकाश की तीन कुंडलियाँ)
Ravi Prakash
मेरी यादों में
मेरी यादों में
ब्रजनंदन कुमार 'विमल'
शारदे देना मुझको ज्ञान
शारदे देना मुझको ज्ञान
Shriyansh Gupta
जीवन एक यथार्थ
जीवन एक यथार्थ
Shyam Sundar Subramanian
कितना खाली खालीपन है !
कितना खाली खालीपन है !
Saraswati Bajpai
Let us create bridges to connect people beyond boundaries,
Let us create bridges to connect people beyond boundaries,
Chitra Bisht
दिन और रात-दो चरित्र
दिन और रात-दो चरित्र
Suryakant Dwivedi
मोतियाबिंद
मोतियाबिंद
Surinder blackpen
" एक थी बुआ भतेरी "
Dr Meenu Poonia
प्यार है ही नही ज़माने में
प्यार है ही नही ज़माने में
SHAMA PARVEEN
मनोकामनी
मनोकामनी
Kumud Srivastava
!! मैं उसको ढूंढ रहा हूँ !!
!! मैं उसको ढूंढ रहा हूँ !!
Chunnu Lal Gupta
राम तुम्हारे नहीं हैं
राम तुम्हारे नहीं हैं
Harinarayan Tanha
ज्योत्सना
ज्योत्सना
Kavita Chouhan
दिल की गुज़ारिश
दिल की गुज़ारिश
सुरेन्द्र शर्मा 'शिव'
"सतगुरु देव जी से प्रार्थना"......💐
सोलंकी प्रशांत (An Explorer Of Life)
4392.*पूर्णिका*
4392.*पूर्णिका*
Dr.Khedu Bharti
बीजारोपण
बीजारोपण
आर एस आघात
पलकों से रुसवा हुए,
पलकों से रुसवा हुए,
sushil sarna
विश्व की पांचवीं बडी अर्थव्यवस्था
विश्व की पांचवीं बडी अर्थव्यवस्था
Mahender Singh
न काज़ल की थी.......
न काज़ल की थी.......
Keshav kishor Kumar
खोज करो तुम मन के अंदर
खोज करो तुम मन के अंदर
Buddha Prakash
Loading...